পর্যটন খাতে ইসলামি দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
বাসস
০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৮:৫৩
রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসির পর্যটন মন্ত্রীদের ১০ম ইসলামিক সম্মেলনের (আইসিটিএম) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসির পর্যটন মন্ত্রীদের ১০ম ইসলামিক সম্মেলনের (আইসিটিএম) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পর্যটন এমন একটি ক্ষেত্র, যেখানে ইসলামি দেশগুলো বৃহত্তর সুযোগ ও সম্ভাবনা খুঁজতে একসঙ্গে কাজ করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী পর্যটন একটি দ্রুত বিকাশমান খাত, যা বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এখানে একসঙ্গে কাজ করার বড় সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার সকালে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসির পর্যটনমন্ত্রীদের ১০ম ইসলামিক সম্মেলনের (আইসিটিএম) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ওআইসিভুক্ত দেশের পর্যটনশিল্পের উন্নয়নে ভবিষ্যতে বৃহত্তর পরিসরে সহযোগিতা ও সমন্বয় বাড়াতে এই সম্মেলনের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। অর্থনৈতিক ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে পরস্পরের কাছাকাছি আসা এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের ক্ষেত্রে এ সম্মেলন নতুন সুযোগ ও দিগন্ত উন্মোচন করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে ওআইসি সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক বিশ্বাস, বোঝাপড়া ও সহযোগিতার ভিত্তিতে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার বিনিময় নিজেদের মানোন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী আ ক ম শাহজাহান কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ওআইসির মহাসচিব ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওসাইমিন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মুহম্মদ ফারুক খান বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এস এম গোলাম ফারুক অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। এ ছাড়া নাইজারের পর্যটনমন্ত্রী এবং সম্মেলনের বিদায়ী চেয়ারপারসন আহমেদ বথু এবং জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড টুরিজম অর্গানাইজেশনের (ইউএনডব্লিউটিও) এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ইসলামি ঐতিহ্যের ওপর নির্মিত একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, জাতীয় সংসদের সদস্য, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা, কূটনীতিক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা এবং সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ৩০টি রাষ্ট্রের ১৫ জন পর্যটনমন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনের রীতি অনুযায়ী নাইজারের পর্যটনমন্ত্রী এবং সম্মেলনের বিদায়ী চেয়ারপারসন আহমেদ বথুর বক্তৃতার পরপরই তিনি পরবর্তী দুই বছরের জন্য আইসিটিএমের চেয়ারপারসনশিপ বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী আ ক ম শাহজাহান কামালের কাছে হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলামিক অর্থনীতি একটা নতুন বিষয় হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। এটির বিকাশ অব্যাহত থাকবে এবং সারা বিশ্বের মুসলমানদের দ্বারাই এটি পরিচালিত হবে। ইসলামিক পণ্য ও সেবার বিশ্বব্যাপী সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা এবং একটি বিশাল ভোক্তা থাকার কারণে বিশ্বাসভিত্তিক পণ্য ও সেবার সম্প্রসারণের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি অমুসলিম সম্প্রদায়ের কাছেও এসব পণ্য ও সেবা জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় ইসলামিক সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
হালাল খাদ্য, ইসলামিক অর্থনীতি, হালাল ওষুধ এবং প্রসাধনী, হালাল পর্যটন ইত্যাদি ইসলামিক অর্থনীতির বর্ধিঞ্চু খাতগুলোর মধ্যে অন্যতম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই খাতগুলোর উন্নয়নে ওআইসিভুক্ত দেশগুলোকে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব আরও জোরদার করতে হবে। তিনি এ সময় বিশ্বব্যাপী উদ্বাস্তু সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন যাবৎ উদ্বাস্তু সমস্যা মোকাবিলা করে আসছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত বিপুলসংখ্যক উদ্বাস্তু সম্প্রতি আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে। নিজ বাসভূমিতে জাতিগত নিধনের ভয়াবহ নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে বাংলাদেশ অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়েছে।’ তিনি ওআইসিসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যারা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে দৃঢ়ভাবে সমর্থন দিয়েছে, তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। এ বিষয়ে ওআইসির বহুমাত্রিক ভূমিকা প্রশংসার দাবি রাখে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সারা বিশ্বের মুসলমানদের মিলিত কণ্ঠস্বর হিসেবে ওআইসির সব সদস্যরাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতা মুসলিম বিশ্বের স্বার্থরক্ষায় সহায়ক হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, পারস্পরিক সহযোগিতার শক্তিতে বিশ্বাস এবং যৌথ ধারণার প্রতি অনুপ্রাণিত হয়েই বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে ওআইসিতে যোগদান করেন। তখন থেকেই বাংলাদেশ সব সদস্যরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। ইসলামের মহৎ মূল্যবোধগুলো যেমন ভ্রাতৃত্ব, ন্যায়বিচার, একতা এবং সবাইকে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে মুসলিম উম্মার সংহতিকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পর্যটনশিল্পের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ জন্য তিনি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। পর্যটনশিল্পকে এগিয়ে নিতে আমাদের দেশে সম্পদের অভাব নেই।’ তিনি বলেন, সুদীর্ঘ মেরিন ড্রাইভসহ বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ ও নিরবচ্ছিন্ন সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার, বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল এবং বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল সুন্দরবন বাংলাদেশে অবস্থিত। সাগরকন্যা কুয়াকাটা অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এসব স্থান পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হতে পারে।
শত শত নদী জালের মতো ছড়িয়ে থেকে এই দেশকে ছবির মতো সুন্দর করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শত শত সবুজ চা-বাগান আপনাকে দেবে অবকাশ যাপনের চোখ জুড়ানো মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ। এ ছাড়া আমাদের হাজার বছরের প্রাচীন ইতিহাস ও প্রত্নসমৃদ্ধ স্থানগুলো, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক ঐতিহ্যগুলো আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।’
বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পকে অর্থনৈতিক খাত হিসেবে উন্নত করতে তাঁর সরকার বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী পর্যটনের টেকসই উন্নয়নের জন্য ‘জাতীয় পর্যটন নীতি ২০১০’ প্রণয়ন এবং ‘জাতীয় শিল্পনীতি ২০১০’-এ পর্যটনশিল্পকে ‘দ্রুত বর্ধনশীল খাত’ হিসেবে চিহ্নিত করায় তাঁর সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
বাংলাদেশকে পরবর্তী দুই বছরের জন্য ১০ম ইসলামিক কনফারেন্স অব টুরিজম মিনিস্টার্সের চেয়ারপারসন নির্বাচিত করায় তিনি সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ তার দায়িত্ব পালনকালে সহযোগিতা ও যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ওআইসি সদস্যদেশগুলোর মধ্যে পর্যটন খাত বিকশিত করতে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নেবে।
আরও সংবাদ
বিষয়:
সরকার
শিক্ষামন্ত্রী একা কী করবেন?
শিক্ষামন্ত্রী একা কী করবেন?
আ.লীগ আজ থেকে সতর্ক, সজাগ থাকবে : কাদের
আ.লীগ আজ থেকে সতর্ক, সজাগ থাকবে : কাদের
উচ্চমাত্রায় শব্দযন্ত্র ব্যবহার না করার নির্দেশ
উচ্চমাত্রায় শব্দযন্ত্র ব্যবহার না করার নির্দেশ
ফি বাড়লেও মিলছে না সেবা
ফি বাড়লেও মিলছে না সেবা
মন্তব্য
মন্তব্য করতে লগইন করুন অথবা নিবন্ধন করুন
বাল্যবিবাহ রোধ করবে ‘কিশোরী ব্রিগেড’
আগের সংবাদ
আ.লীগ আজ থেকে সতর্ক, সজাগ থাকবে : কাদের
পরের সংবাদ
৩২ ধারা ধারা বাতিল চায় সম্পাদক পরিষদ
বাংলাদেশ
আ.লীগ আজ থেকে সতর্ক, সজাগ থাকবে : কাদের
বাংলাদেশ১৭
বারকাতই ব্যাংকটি শেষ করে দিয়েছেন: অর্থমন্ত্রী
অর্থনীতি৭১
ছেলের নাম নিয়ে দ্বিধায় মুশফিক
খেলা৬
বেশি পেয়ে অখুশি দ্রাবিড়
খেলা১
‘বিসিসিআই’ এখনো চালান মোদি!
খেলা
‘আত্মনিয়ন্ত্রণ’ শতভাগ আফিফের মধ্যে
খেলা৫
বুকের ধনকে বাঁচাতে বুকের দুধ বিক্রি
আন্তর্জাতিক৭
প্রথম আলো
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
প্রচ্ছদ
বাংলাদেশ
আন্তর্জাতিক
অর্থনীতি
খেলা
মতামত
বিনোদন
ফিচার
জীবনযাপন
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
রস+আলো
পাঁচমিশালি
আমরা
শিল্প ও সাহিত্য
শিক্ষা
ছবি
ভিডিও
আর্কাইভ
বিজ্ঞাপন
সার্কুলেশন
পবিত্র হজ
দূর পরবাস
উত্তর আমেরিকা
২২২১ট্রাস্টপ্রতিচিন্তাচাকরি ডটকমabc রেডিও
Prothom Alo is the highest circulated and most read newspaper in Bangladesh. The online portal of Prothom Alo is the most visited Bangladeshi and Bengali website in the world.
Privacy Policy
© স্বত্ব প্রথম আলো ১৯৯৮ – ২০১৮
সম্পাদক ও প্রকাশক: মতিউর রহমান
সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভেনিউ,
কারওয়ান বাজার, ঢাকা ১২১৫
ফোন: ৮১৮০০৭৮-৮১, ফ্যাক্স: ৯১৩০৪৯৬,
ইমেইল: <a href="https://tripsbary.wordpress.co